উত্তরায় স্কুলে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় অন্তত ২০ জনের মৃত্যু, আহত ও দগ্ধ শতাধিক

ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ী এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল এলাকায় বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, আহত ও দগ্ধ হয়েছে শতাধিক, যাদের বেশিরভাগই শিশু শিক্ষার্থী। সোমবার দুপুর বিমানটি বিধ্বস্ত হয় বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর আইএসপিআর।

বিমান বিধ্বস্তের ছবি

সরাসরি কভারেজ

এক ঘন্টা আগে

আহতদের দেখতে উপদেষ্টা, রাজনৈতিক নেতাদের ভিড়ে বার্ন ইনস্টিটিউটের ভেতরে-বাইরে বিশৃঙ্খলা

hospital area

ঢাকায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন আহতদের বেশিরভাগের অবস্থা 'ক্রিটিক্যাল' বা গুরুতর বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মো. নাসিরউদ্দিন। তবে কয়েকজন উপদেষ্টা ও রাজনীতিকরা পরিদর্শনে গেলে হাসপাতালটির ভেতরে-বাইরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আজ দুপুরের পর আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করার পর থেকে সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা একের পর এক হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন আহতদের দেখতে যান। তাদের প্রটোকল এবং তাদের সঙ্গে থাকা লোকজনের ভিড়ে হাসপাতালের ভেতরে- বাইরে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি হয়। সে সময় সেখানে উপস্থিত অনেককে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। এছাড়া আহতদের স্বজন ও উৎসুকদের ভিড় সামলাতেও হিমশিম খেতে হয় হাসপাতালটির নিরাপত্তা কর্মী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। বার্ন ইউনিটের জরুরি বিভাগে আজ সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ৫১ জন ভর্তি হয়েছেন। গুরুতর আহতদের অনেকের জন্য রক্তের প্রয়োজন হচ্ছে। রক্ত দানের জন্য স্বেচ্ছ্বাসেবী অনেক সংগঠন রক্ত দানের জন্য আহ্বান জানাচ্ছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, এ মুহূর্তে রক্তের প্রয়োজন নেই। তবে যারা রক্ত দিতে ইচ্ছুক, তাদের নিবন্ধন করার আহ্বান জানানো হয়েছে। রক্তের প্রয়োজন হলে তাদের সাথে যোগাযোগ করা হবে।

সন্তানদের ছবি হাতে হাসপাতালে খুঁজছেন অনেক স্বজন

Parents searching for their children

উত্তরা আধুনিক মেডিকেল হাসপাতাল থেকে বিবিসির সাংবাদিক মুকিমুল আহসান জানাচ্ছেন, সেখানে এখনো অসংখ্য মানুষ ভিড় করে আছেন। তাদের মধ্যে অনেকে এসেছে আহতদের সাথে আর অনেকে এখনো স্বজনদের খুঁজছেন। এই স্বজনদের অনেকে তাদের সন্তানদের ছবি নিয়ে হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরছেন। এই হাসপাতালেও তারা স্বজনকে খুঁজতে এসেছিলেন। প্রাথমিকভাবে এই হাসপাতালে ৬০ জন ভর্তি হয়েছিলেন। পরবর্তীতে তাদের অনেকে অন্যান্য হাসপাতালে চলে গেছেন। এখনো ২৩ জন ভর্তি রয়েছেন। কিছুক্ষণ পরপরেই সেখানে রোগীদের স্বজনরা আসছেন, ছোটাছুটি করছেন। মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর অনেকেই স্বেচ্ছাসেবাী হিসাবে উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছিলেন। তারা বিবিসিকে জানিয়েছেন, ওই স্কুল থেকে আহতদের উদ্ধার করে শুরুতেই এই আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। তাদের বেশিরভাগের শরীরের নানা অংশ পুড়ে গিয়েছে। একজন চিকিৎসক বিবিসিকে জানিয়েছেন, আহত বা দগ্ধ অবস্থায় যাদের আনা হয়েছে, তাদের বেশিরভাগের বয়স ছিল ১০ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। অর্থাৎ তারা প্রায় সকলেই ওই স্কুলের বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাদের কেউ কেউ চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছে, কাউকে কাউকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

শনাক্ত হলে মৃতদেহ অতিসত্বর পরিবারের কাছে হস্তান্তর শনাক্ত হলে মৃতদেহ অতিসত্বর পরিবারের কাছে হস্তান্তর

উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহতদের মধ্যে যাদের পরিচয় শনাক্ত করা যাবে, তাদের মৃতদেহ দ্রুত পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে একটি বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, যাদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করা যাবে না, তাদের মৃতদেহ ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করে পরবর্তীতে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

স্কুলে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার আরও কিছু ছবি

fire service plane crash

বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন